ঘরোয়া পদ্ধতিতে বাড়ির ছাদের টবেই ফলন করুন এই বারোমাসি লঙ্কা

Spread the love

প্রত্যেকের রান্নাঘরে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী হলে লঙ্কা। লঙ্কা ছাড়া কোন খাবারই স্বাদ আসে না। এই লঙ্কা সবসময় বাজারে ভালো পাওয়া যায় না। এবার যদি আপনি সারা বছর বাড়িতেই লঙ্কার চাষ করতে পারেন কেমন হয়। কিভাবে করবেন এটাই ভাবছেন তো? কোন চিন্তার কারণ নেই। আজকের এই প্রতিবেদনে আপনাদের খুব সহজেই কিভাবে লঙ্কার চাষ করতে হয় এবং সুস্বাদু লঙ্কা ফলাতে হয় সেটাই আপনাদের আজকে জানাবে।

সঠিক টব নির্বাচন ও উপযুক্ত পরিবেশ: বাড়িতে সঠিক পদ্ধতিতে লঙ্কা চাষ করতে গেলে আপনাদের প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে উপযুক্ত পরিবেশ ও টব নির্বাচনের ক্ষেত্রে। লঙ্কা বারো মাসে চাষ করা যেতে পারে। ফল পাকার সময় অবশ্যই আবহাওয়া শুকনো থাকা খুবই প্রয়োজনীয় যে সময়েই বীজ বপন করা হোক না কেন। খুব বেশি গরমে লঙ্কার ফলন ভালো হলেও রঙ আর ঝাঁজ অনেক কমে যায়। আবার লঙ্কা গাছে ফুল ধরার সময় যদি খুব বেশি বৃষ্টি হয় তাহলে ফুল ও ফল ঝরে যায় গাছ জল জমে পঁচে যায়।

২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে লঙ্কা চাষ করা উপযুক্ত। যেখানে সূর্যের আলো ভালো মতন পৌঁছায় লঙ্কা গাছটিকে সেখানেই রাখতে হবে। হাওয়া বাতাস পূর্ণ স্থানে লঙ্কা গাছ রাখলে খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে ভালোভাবে দাঁড়িয়ে যায়। লঙ্কা চাষ করার জন্য প্লাস্টিক বা মাটির টপ মাঝারি সাইজের হলেই যথেষ্ট। বেডিংয়ের এর জন্য ভাঙ্গামাটির পাত্রে ছোট একটি টুকরো নিন। টুকরোটা যেদিক ঢেউ খেলানো সেদিকটা নিচে রেখে তবে ছিদ্রের ওপর বসাতে হবে। প্রথমে ভাঙা টুকরোটা অল্প স্টোন চিপস দিয়ে এবং পরে অল্প বালি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। গাছে জল দেওয়ার সময় ওই ছিদ্রের মাধ্যমে খুব সহজে মাটি বেরিয়ে যেতে পারে এটা না করলে।

গাছের জন্য মাটি তৈরি পদ্ধতি: লঙ্কা চাষের জন্য বেলে মাটি ও দোআঁশ মাটি উপযুক্ত। তবে মাটি দেওয়ার সময় পরিমাণ মতো জৈব সার গোবর সার এবং ইউরিয়া সার মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর কিনে আনা চারাগাছটি পুঁতে দিতে হবে। এরপর ইউরিয়া সার, পটাশ সার এবং ম্যাগনেসিয়াম সালফেট প্রতিটি এক টেবিল চামচ করে মিশিয়ে নিতে হবে। এটি প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর মাটির চারিদিকে ঢেলে জল দিয়ে দিতে হবে। গাছটা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য না পায় তবে এটি দ্রুত নিয়ে পড়বে।

গাছটির যত্ন করার পদ্ধতি: গাছটির বেড়ে ওঠার সাথে সাথে আপনাদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে হবে। হঠাৎ যদি গাছের বৃদ্ধি আটকে যায় সেক্ষেত্রে দোকানে গিয়ে ভিটামিন লিকুইডের খোঁজ করতে হবে। লিকুইটি ক্রয় করার সময় দেখবেন প্যাকেটের গায়ে গ্রোথ রেগুলেটর লেখা আছে কিনা। এক লিটার জলে ৩০ ফোঁটা ভিটামিন লিকুইড মিশিয়ে প্রতি ১০ দিন পর পর গাছে স্প্রে করতে হবে। এই রেস্টুরেন্টের প্রয়োগ করলে আপনাদের গাছের খুব ভালো ফলন হবে।

এছাড়াও গাছে যদি পিঁপড়ের উপদ্রব থাকে সেক্ষেত্রে সাবান গুঁড়ো মাটিতে ছড়িয়ে দিলে পিঁপড়ের উপদ্রব কমে যাবে। এছাড়াও পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে গাছকে রক্ষা করার জন্য ক্যারিনা ব্যবহার করবেন। এগুলি ৩০ ফোঁটা পরিমাণ ওষুধ এক লিটার জলের মেশাতে হবে, প্রতি ১০ দিন অন্তর কাছে স্প্রে করতে হবে। তাহলেই ফলাফল আপনার চোখেই দেখতে পারবেন। অবশেষে মনে রাখতে হবে গাছের অতিরিক্ত জল কখনো দেবেন না এমন ভাবে জল দিতে হবে যাতে টবে জল না জমে, আবার মাটি শুকিয়েও না যায়।


Spread the love

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *