Burima: এক সাধারণ বুড়িমা থেকে একজন জনপ্রিয় বুড়িমা, কি তাঁর রহস্য?

Spread the love

যে কোন উৎসবেই আমরা বাজি ফাটিয়ে উদযাপন করি। দুর্গাপুজো হোক বা কালীপুজো, বিয়ে বাড়ি হোক বা খেলায় জেতার আনন্দে ,সবেতেই কিন্তু আমরা দেদার বাজি ফাটাই। বিশেষ করে বাঙ্গালীদের কালীপুজোর মানেই অনেক অনেক বাজির ফোয়ারা। আর বাজির কথা বলতেই সবার আগে যে নামটি উঠে আসে সেটি হলো বুড়িমা। কালীপুজো হোক বা বিয়ে বাড়ি অথবা দুর্গাপুজোর ভাসানে বুড়িমার বাজি থাকবেই থাকবে।

কিন্তু কেউ কি জানেন ,কে এই বুড়িমা? তার আসল পরিচয় কি? বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে শব্দবাজি নিষিদ্ধ। কিন্তু আশি ও নব্বইয়ের দশকে ছেলেবেলা কেটেছে তাদের শৈশব জুড়ে বাজি বলতে শুধুই বুড়িমার চকলেট বোম ,তারাবাজি এছাড়াও অন্যান্য অনেক রকমের বাজি। এই জনপ্রিয় বাজির পিছনে ছিলেন বুড়িমা ওরফে অন্নপূর্ণা দাস। বুড়িমা মানেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বাঙালি এক মহিলার একা টিকে থাকার লড়াইয়ের কাহিনী।

যখন দেশ ভাগ হয়েছিল তখন সবকিছু ছেড়ে বাধ্য হয়ে তাকে ভারতে চলে আসতে হয়েছিল। রিফিউজি ক্যাম্পে তার ঠাঁই হয়েছিল। স্বামীকে তিনি গঙ্গারামপুরেই হারিয়েছেন। তারপর থেকেই শুরু হল তার জীবনে কঠোর এক লড়াই। বিড়ি বাধার কাজ শুরু করে বিড়ির কারখানা তৈরি করেছিলেন। ঠিকানা ততদিনে বদলেছিল তার।

সব কিছুরই ব্যবসা করেছিলেন তিনি রং থেকে প্রতিমা পর্যন্ত। হঠাৎই একদিন তার মনে ইচ্ছা জাগলো বাজির ব্যবসা শুরু করার। এরপরেই তিনি বাজে কিনে এনে দোকান সাজালেন। অনুমতি না থাকার কারণে দুদিন পরে পুলিশ এসে দোকান ভেঙে দিল।

কিন্তু এতেও থেমে যাননি অন্নপূর্ণা। কিছুদিনের মধ্যেই অনুমতিপত্র জোগাড় করে ফেললেন। কিন্তু বাজি কিনে এনে বিক্রি করতে গেলে লাভের পরিমাণ অনেক কমে যায় তাই তিনি নিজেই বাজি তৈরীর পরিকল্পনা করলেন। কিন্তু বাজি তৈরির শেখাবে কে?

অন্নপূর্ণার সেই সময় আলাপ হল বাঁকড়ার আকবর আলীর সাথে। তিনিই অন্নপূর্ণাকে শেখালেন বাজি বানানো। গন্ধক দেখতে কি রকম? সোরা, ব্যাটরা কাকে বলে? সবকিছুই আস্তে আস্তে শিখে ফেললেন। বাজি তৈরি শিখেই একেবারে বাজিমাত করে ফেললেন তিনি। বুড়িমার বানানো চকলেট বোম বাজারে ফাটলে সশব্দে।

এরপর থেকেই বুড়িমা একটি ব্র্যান্ড হয়ে গেল। কারখানার জন্য ডানকুনিতে জমি কেনা হলো।পরে সেই জমিটি দান করে দেয়া হয়েছিল 50 টি দরিদ্র পরিবারকে। এরকমই দয়াময়ী ছিলেন সকলের প্রিয় বুড়িমা। কিন্তু বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে শব্দবাজি আইনত নিষিদ্ধ। কারাবাস থেকে জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে বাজি কেনা বেচা বা ফাটানোর শাস্তিতে।


Spread the love

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *