2022 ফিফা বিশ্বকাপ ম্যাচ, যার জন্য সারা বিশ্ব অপেক্ষা করছিল। গতকাল রাতেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কাতারের আল বাইত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কাতারের ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী পর্বে পবিত্র কোরআন পাঠ করে সাড়া ফেলেছেন ফিফা বিশ্বকাপের শুভেচ্ছা দূত ২০ বছর বয়সী গানিম আল-মিফতাহ। ফিফা বিশ্বকাপে ৯২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করতে দেখা যায়। পবিত্র কোরআনের সূরা হুজুরাতের ১৩তম আয়াত নিয়ে মার্কিন অভিনেতা মর্গ্যান ফ্রিম্যান ও আল মিফতাহের মধ্যে কথোপকথনের মাধ্যমে উদ্বোধন হয়েছে এবারের ফিফা বিশ্বকাপ।
গত এপ্রিলে গানিমকে কাতারের পক্ষ থেকে ফিফা বিশ্বকাপের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নির্বাচন করা হয়। এবার গানিম ও হলিউড অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যানের সংলাপের মাধ্যমে শুরু হয় বিশ্বকাপের উদ্বোধনী পর্ব। এ সময় পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে মর্গান জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমরা সবাই একটি তাঁবুর নিচে একত্রিত হয়েছি’।
কীভাবে অনেক দেশ, ভাষা ও সংস্কৃতি একত্রিত হতে পারে যদি শুধুমাত্র একটি পথকে গ্রহণ করা হয়? চমৎকার উচ্চারণ সহ, আল মুফতাহ বলেছেন, “হে মানবতা! আমরা তোমাদেরকে একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি, এবং আমরা তোমাদেরকে জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো, এদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি সম্মানিত যে বেশি আল্লাহভীরু, আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং তিনি সব বিষয়ে অবগত।’
গানিম আল মিফতাহ ২০০২ সালে কডাল রেগ্রেশন সিনড্রোম নামের এক বিরল ব্যাধি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। এই ব্যাধির ফলে তার দুই পা সহ নিম্ন মেরুদন্ডের বিকাশকে ব্যাহত করে। তবে এই তরুণ জীবনের সব বাধা-বিপত্তিকে পেরিয়ে সবার অনুপ্রেরণনার পাত্র হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নরত, গানিম মিফতাহ একদিন একজন কূটনীতিক হওয়ার আশা করছেন। তিনি একজন প্রধান সোশ্যাল মিডিয়া তারকা, TikTok-এ সাত মিলিয়নেরও বেশি ফলোয়ার, Instagram-এ 3.3 মিলিয়নেরও বেশি।
World-renowned actor, Morgan Freeman and FIFA World Cup Ambassador, Ghanim Al Muftah at the opening ceremony of the FIFA World Cup Qatar 2022. #Qatar2022 #FIFAWorldCup #FIFAWorldCupQatar202 #MorganFreeman #GhanimAlMuftah pic.twitter.com/4gC51cy976
— The Peninsula Qatar (@PeninsulaQatar) November 20, 2022
গানিম নিজের অক্ষমতা ও প্রতিবন্ধকতার সত্বেও স্কুবা ডাইভিং, স্কেটবোর্ডিং এবং রক ক্লাইম্বিংয়ের মতো চরম খেলায়ও অংশগ্রহণ করেন এবং এগুলি উপভোগ করেন। এছাড়াও তার ঘারিসা আইসক্রিম নামে একটি প্রসিদ্ধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।তিনি ২০০৯ সালে টোয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি লিডার্স ফাউন্ডেশন কর্তৃক একজন আনসার হিরো বা অদৃশ্য থাকা বীর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। এছাড়া ২০১৪ সালে তিনি কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমদ আল-সাবাহ কর্তৃক শান্তি দূত হিসাবে নিযুক্ত হন।