বাড়িতে কি হচ্ছে সেটা আসলেই দীর্ঘ মেয়াদে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে বড় রকমের ভূমিকা রাখে। পিতা মাতার সাথে সন্তানের সম্পর্ক কেমন এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি সমান গুরুত্বপূর্ণ তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক কেমন সেটাও। বাবা মায়ের মধ্যে নিত্যদিন ঝগড়াঝাটির ফলে সন্তানের ভবিষ্যতের উপর কতটা প্রভাব ফেলে তা আজকে এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানাবো।
বাবা মায়ের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। কিন্তু এই ঝগড়াঝাটি যদি নিয়মিত হয় তবে তার প্রভাব সন্তানের উপর পড়ে। তাদের শিশু মনকে বিষিয়ে তোলে।
নিত্যদিনের এই বিবাদ দেখতে দেখতে একদিন সন্তান বাবা-মার দিকেই আঙ্গুল তুলবে। সম্মান এবং গুরুত্ব দুটোই হারাবেন বাবা মা। পিতা মাতার মধ্যে এরকম সম্পর্ক দেখলে সন্তানও পরবর্তীতে কাউকে বিশ্বাস করতে বা ভালবাসতে দ্বিধা বোধ করবে না।
আস্তে আস্তে বাড়িতে থাকার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলবে সন্তান। সন্তানের কাছে বাড়ি একটি সুরক্ষিত ও চিন্তাহীন আশ্রয়। কিন্তু বাড়ির এরকম পরিবেশ দেখলে, সন্তানটি এই সুরক্ষিত আশ্রয় ছেড়ে পালানোর পথ খুঁজবে।
ব্রিটেন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গত কয়েক দশকে যেসব গবেষণা হয়েছে তাতে দেখা গেছে বাবা মায়ের ঝগড়াঝাঁটির প্রভাব পড়তে পারে ছ মাস বয়সী শিশুর উপরও। অহরহ কলহের কারণে আপনি সন্তানের চোখে অনেক বিষিয়ে উঠবেন। আত্মসম্মান হারাবেন সন্তানের কাছে।
বাবা মায়ের কলহের কারণে সন্তান নিজের উপর থেকেও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এর ফলে ভবিষ্যতে তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথ ক্রমশই অবরুদ্ধ হয়ে উঠবে।
শৈশবের স্মৃতি আমাদের সবার কাছেই মধুর। কিন্তু ভালো স্মৃতির সাথে খারাপ স্মৃতিও আজীবন আমাদের সঙ্গী হয়ে থেকে যায়।তিক্ততায় ভরা স্মৃতি তাড়া করে বেড়ায় সারাজীবন। এই স্মৃতি চাইলেও ভোলা যায় না।১৯ বছর বয়সী সন্তানের ওপরেও বাবা মায়ের ঝগড়া উল্লেখযোগ্যভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম।
এছাড়াও যেসব বাচ্চারা প্রতিনিয়ত এসব ঘটনার সম্মুখীন হয়, তারা একদিকে যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে তেমনি এ ধরনের পরিস্থিতি বাবা মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে। এছাড়াও বাবা মায়ের ঘন ঘন ঝগড়ার কারণে সন্তানের মনোযোগ নষ্ট হয় ও তারা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।